১১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার পায়নি পরিবার
০৭ জানুয়ারি, ২০২২, 9:53 AM
NL24 News
০৭ জানুয়ারি, ২০২২, 9:53 AM
১১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার পায়নি পরিবার
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও কাক্সিক্ষত বিচার পায়নি নিহতের পরিবার। এমনকি বন্ধ থাকা বিচারকাজ কবে শুরু হবে, তাও জানেন না ফেলানীর মা-বাবা।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে দিল্লিতে থাকতেন। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর ৬টার দিকে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হন ফেলানী। সাড়ে ৪ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকার পর তার লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে পরের দিন লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ। এর পর নানামুখী চাপে ২০১৩ সালের আগস্টে ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে হত্যাকা-ের বিচার শুরু হয়। একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অমিয় ঘোষকে খালাস দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত। পুনর্বিচারেও ২০১৫ সালে জুলাই মাসে একই রায় দেন একই আদালত। এর পর ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় সংগঠন ‘মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (মাসুম) ফেলানী হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবিতে দেশটির সুপ্রিমকোর্টে রিট আবেদন করেন। কিন্তু রিটের শুনানি বারবার পিছিয়ে যায়। এর মধ্যে শুরু হয় করোনা মহামারী। সব মিলিয়ে ফেলানী হত্যার বিচার বর্তমানে থমকে গেছে।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম জানান, ফেলানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মিলাদ পড়ানো হবে। এ জন্য বিজিবি কিছু সহায়তা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘১১ বছর হয়ে গেল; ফেলানী হত্যার বিচার পেলাম না। ওই সময় সরকার সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছিল, তা তখনই শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে বিজিবি ছোট মুদি দোকান দিয়ে দেয়। এখন সেটা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া চালাচ্ছি।’ নূর ইসলাম আরও বলেন, ‘বারবার বিচারের তারিখ বদলায়। তা হলে বিচার পাব কীভাবে! ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনার আগে শুনানির তারিখ থাকলেও তা হয়নি। এখন আর কোনো খোঁজখবর জানি না।’
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন আমাদের সময়কে জানান, ফেলানী হত্যার বিচার প্রথমত ভারতই শুরু করে। কিন্তু বিএসএফ সঠিক রায় না দেওয়ায় বিচার গড়ায় সুপ্রিমকোর্টে। কয়েক দফা শুনানির তারিখ পিছিয়ে গেছে। মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শুনানি হবে।