কিশোরী ধর্ষণ ঘটনায় : ধর্ষকের বড় ভাই রঞ্জু হেফাজতে
নিজস্ব প্রতিনিধি
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, 7:21 PM
নিজস্ব প্রতিনিধি
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, 7:21 PM
কিশোরী ধর্ষণ ঘটনায় : ধর্ষকের বড় ভাই রঞ্জু হেফাজতে
ওসমানীনগর প্রতিনিধি ।। সিলেটের ওসমানীনগরে ১৭ বছরের কিশোরী ধর্ষণের পর অনৈতিক সুবিধা দিয়ে গর্ভপাতে চাপ প্রয়োগ করায় অভিযুক্ত রঞ্জু দেবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে থানা পুলিশ। রঞ্জু দেব (৪৫) উপজেলার নিজ বুরঙ্গা গ্রামের রাখাল দেবের ছেলে ও ধর্ষক সজু দেবের বড় ভাই। রবিবার সকালে রঞ্জু দেবকে থানায় নেয় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য ওসি মাসুদুল আমিন বলেন, রঞ্জু দেবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এখনো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে, নির্যাতিতা কিশোরী বাদি হয়ে রঞ্জুদেবসহ তিন জনকে আসামী করে গত ১১ জুলাই সিলেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ২৪ আগস্ট মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবি আই) কে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই মামলায় উপজেলার নিজ বুরুঙ্গা গ্রামের ইউপি সদস্য শিবু দেব, রঞ্জু দেব ও একই এলাকার কথিত ডাক্তার বাসু দাসকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, রঞ্জু দেবের ছোট ভাই সজু কতৃক ধর্ষিত হওয়ার পর ওসমানীনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২ মে ধর্ষিতার পিতা মামলার আবেদন করলে মামলাটি আমালে নিলেও সজুকে এখনও গ্রেতার করতে পারে নি পুলিশ । মামলা দায়েরের পর সজুর বড় ভাই রঞ্জু দেব,ইউপি সদস্য দিপংকর দেব শিবু,স্থানীয় কথিত ডাক্তার বাসু দাস ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিশোরীকে গর্ভপাতের প্রস্তাব দিলে সে তা প্রত্যখান করে। পরবর্তীতে বিগত ৫ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে পবিত্র হিন্দু ধর্মের বিবাহ রীতি মোতাবেক শিবু দেবের রুমে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বিবাহের মঙ্গলাচরন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ার আশ্বাস দেন রঞ্জু দেব ও শিবু দেব। নিরর্ধারিত সময়ে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হলে কিশোরীসহ তাদেরকে সেখানে আটকে রাখা হয়। এসময় কথিত ডাক্তার বাসু এম এম কিট নামক ২ বক্স ট্যাবলেট ওই কিশোরীর হাতে দিয়ে এবং শিবু পানি দিয়ে একটি ট্যাবলেট সেবনের জন্য জোর জবরদস্তি করলে কিশোরী রাজি না হওয়ায় তাকে বর্বর শারিরিক নির্যাতন করা হয়। ঔষধ সেবনে করাতে ব্যর্থ হয়ে একটি সাদা কাগজে জোরপূর্বক টিপসই রাখে অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে এই ঘটনায় গত ১১ জুলাই সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি ১ নং আদালতে ইউপি সদস্য দিপংকর দেব শিবু, রঞ্জু দেব ও বাসু দাসকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
প্রসংগত:: ২৩ জুলাই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রী ও সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ধর্ষকের বাড়িতে উঠেন। সকাল ৯ টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত ওই বাড়িতে অবস্থান নিলেও ঘরের কেউ দরজা না খোলায় আকুতি মিনতে করেও স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন কিশোরী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অভিযুক্তের পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলতে না পেরে তরুনীর সাথে আলোচনা করে গভীর রাতে শিশু সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়িতে পৌছে দেয় পুলিশ।