ঢাকা ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
সেরা ফ্রিল্যান্সারের স্বীকৃতি পেল ওসমানীনগরের শিক্ষার্থী জাহেদ বড়লেখার সীমান্তে পড়েছিল চা শ্রমিকের গুলিবিদ্ধ নিতর দেহ পিএসিতে "গোল্ডেন এ প্লাস" বড় হয়ে জাষ্ঠিস হতে চায় সালমান সংবাদ সম্মেলন প্রবাসীর সম্পত্তি দখল করতে পুলিশ ও বহিরাগতদের দিয়ে হয়রানি ওসমানীনগরে বিএনপি নেতা লিলফর বহিষ্কার আলীপুর নূরানি একাডেমির অসাধারণ সাফল্য জুড়ীতে প্রবাসী সাংবাদিক আব্দুর রব ভুট্টোকে সংবর্ধনা রাজনগরে ঊষা কে,জি স্কুলে মহান বিজয় দিবস পালিত তাহিরপুরে মহান বিজয় দিবসকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের মিছিল নানা আয়োজনে ওসমানীনগরে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

খোলা চুল দেখলেই বিপদ, বিয়ে করতে হয় সেই নারীকে তিন বছরের জন্য

#

১২ ডিসেম্বর, ২০২১,  9:39 AM

news image

চীনের নারীরা তাদের সুন্দার ত্বক ও রেশমি চুলের জন্য পরিচিত। তবে চীনের একটি প্রাচীন গ্রাম হুয়াংলুতে নারীদের চুল এক দশমিক পাঁচ মিটার থেকে দুই মিটারেরও বেশি লম্বা হয়। চীনের এই গ্রামটি লম্বা চুলের গ্রাম নামেও পরিচিত।

এই ছোট গ্রামের মেয়েরা বিয়ের আগে কেবল তাদের ১৮ তম জন্ম দিন উপলক্ষে চুল কাটতে পারবেন। এর অর্থ জীবনে প্রথমবার চুল কেটে মেয়েরা বিয়ের জন্য প্রস্তুত হয়। তবে ঐ কাটা চুল ফেলে দেওয়া যাবে না। কাটা চুলের অংশ কিশোরীর দাদিমার হাতে দিতে হবে। এ চুল দিয়ে তৈরি অলঙ্কৃত শিরস্ত্রাণ ঐ কিশোরীর বিয়ের দিন তার বরকে উপহার দেওয়ার নিয়ম হিসেবে প্রচলিত আছে। দুই হাজার বছর ধরে চীনের এ গ্রামটিতে চলে আসছে এই চুল না কাটার প্রথা।


চীনের বেইজিংয়ের হুয়াংলু নামের ছোট এই গ্রামটি বিশ্বজুড়ে পরিচিত এখানকার নারীদের সুদীর্ঘ ঘন চুলের জন্য। এ গোষ্ঠীর কাছে নারীদের লম্বা কালো চুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীকই নয়, তাদের ঐতিহ্যের অংশ ও অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এদের কাছে চুলের ধর্ম শুধুই বেড়ে যাওয়া। সারা জীবনে মাত্র একবারই চুল কাটেন চীনা এই নারীরা।

কয়েক যুগ আগেও এ গ্রামের নারীদের চুল নিয়ে সবাইকে ছিলো বেশ রক্ষণশীল। রেড ইয়াওদের জীবনে চুল ছিলো সম্পদের মতো। একসময় স্বামী-সন্তান ছাড়া কেউ নারীদের খোলা চুলে চোখ রাখার অনুমতি পেতো না। তখনকার দিনে গ্রীষ্ম বা শরতে নারীরা মাথায় নীল ওড়না বেঁধে নদীতে চুল ধুতে যেতো। যদি কোনো স্থানীয় বা বিদেশিরা তরুণীর চুল দেখার জন্য বাড়াবাড়ি করতো, তাহলে শাস্তি হিসেবে তিনবছর তাকে ঐ তরুণীর বাড়িতে জামাই হিসেবে থাকতে হতো।

যদি কোনো স্থানীয় বা বিদেশিরা তরুণীর চুল দেখার জন্য বাড়াবাড়ি করতো, তাহলে শাস্তি হিসেবে তিনবছর তাকে ঐ তরুণীর বাড়িতে জামাই হিসেবে থাকতে হতো
যদি কোনো স্থানীয় বা বিদেশিরা তরুণীর চুল দেখার জন্য বাড়াবাড়ি করতো, তাহলে শাস্তি হিসেবে তিনবছর তাকে ঐ তরুণীর বাড়িতে জামাই হিসেবে থাকতে হতো

তবে পুরনো এ নিয়ম ভেঙে ফেলা হয় ১৯৮৭ সালে। এখন ইয়াও নারীরা স্বগর্বে উন্মুক্ত ভাবে নিজের চুল প্রদর্শনী করতে পারে। আপাতত এই লম্বা চুলকেই ব্যবহার করে পর্যটকদের থেকে টাকা আয় করেন ঐ প্রদেশের নারীরা। এছাড়াও লম্বা চুলের নারীরা দলবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে নাচ, গান করে পর্যটকদের থেকে মাসে ৩০০ ডলার করে রোজগার করে।

তারা চুলে কোনো কাটছাঁট করে হেয়ারস্টাইল না করলেও তাদের মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হেয়ারস্টাইল। যদি কোনো নারী চ‍ুল সাধারণভাবে মাথার চারপাশে জড়িয়ে রাখে তাহলে বুঝতে হবে সে বিবাহিত। তবে তার কোন সন্তান নেই। যদি সে তার মাথায় রুমাল জড়িয়ে রাখে, তার মানে সে জীবনসঙ্গী খুঁজছে। বলা হয়ে থাকে, রেড ইয়াও নারীর চুলের তিনটি স্তবক। প্রথম হলো চুল যা প্রতিদিন গাজায়। দ্বিতীয়ত, কেটে ফেলা অংশ ও তৃতীয় হচ্ছে, ঝরে পড়া চুল যা রোজই সংগ্রহ করা হয়। তিন স্তবকের চুল বিন্যাস তাদের সামাজিক মর্যাদার প্রতিনিধিত্ব করে। শত ঝামেলা থাকা সত্ত্বেও একবারের বেশি চুল কাটার অনুমতি পাবে না এ গ্রামের নারীরা। এরপর স্বাভাবিকভাবে চুল তার নিজের আপন খেয়ালে বেড়েই চলে। এখানকার নারীদের চুল সতেজ রাখার জন্যও কোনো তেল লাগে না। লাগে না কোনো শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার। চুলের যত্নে রেড ইয়াও ব্যবহার করে একটি বিশেষ শ্যাম্পু। চাল ধোয়া পানি দিয়ে হয় চুলের চর্চা। আর গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে চলা নদীর পানিতে চুল ভালো করে ধুয়ে নেন তারা। এভাবেই চলে নিয়মিত চুলের পরিচর্যা।

তারা লম্বা চুলকে এত প্রাধান্য দেয়ার কারণ তাদের বিশ্বাস- লম্বা চুল আয়ু, ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্য বয়ে আনে। এ বিশ্বাস আর ঐতিহ্যকে প্রায় দুই হাজার বছর ধরে লালন করে আসছে হুয়াংলুর রেড ইয়াও নারীরা। সাধারণত এই গ্রামের নারীদের চুল প্রায় ২.১ মিটার বা ৬.৮ ফুট লম্বা হয়। বয়স হলেও তাদের চুলে পাক ধরে না।



logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মনিরুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : মারজান আহমেদ