বর্ধিত সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি তিনটি প্রকল্পে মাটির কাজ
১৫ মার্চ, ২০২৩, 2:40 AM
NL24 News
১৫ মার্চ, ২০২৩, 2:40 AM
বর্ধিত সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি তিনটি প্রকল্পে মাটির কাজ
শওকত হাসান, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় হলেও পরিদর্শনে এসে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম সময় বাড়িয়ে ৭ মার্চের মধ্যে হাওরের সব ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদের বর্ধিত সময় শেষ হলেও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের তিনটি প্রকল্পে এখনো মাটির কাজ শেষ হয়নি।
হাওরের যেকোনো একটি অরক্ষিত বাঁধই পুরো হাওরের শতভাগ ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
মঙ্গলবার (১৪মার্চ) উপজেলার মাটিয়ান হাওরের দুর্গম পুটিমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৬৯, ৭০ ও ৭১ নম্বর প্রকল্পে মাটির কাজ চলছে। পুটিমারা বাঁধটিতে এ তিনটি প্রকল্পে প্রায় ৬০লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ২৮, ২৯, ৩২ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পে মাটি ফেলার কাজ শেষ হলেও হয়নি দুরমুজ, ড্রেসিং ও দুর্বাঘাষ লাগানো। এমন কি এসব প্রকল্পে কাজ করতেও দেখা যায়নি কোন শ্রমিককে। প্রকল্প ঘুরে কোন পিআইসির লোকদেরও পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট হাওরপাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ তিনটি প্রকল্পে এখনো মাটির কাজ বাকি আছে। এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হতে আরো ৭ দিন সময় লাগবে। এছাড়াও ২৮, ২৯, ৩২ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পে মাটি ফেলার পর দুরমুজ করে মাটি চাপা দেওয়া, বাঁধের মাটিতে সমান করে দূর্বাঘাস লাগানো ও বাঁধে মাটির ধসে যাওয়া ঠেকাতে বাঁধের পাশে কার্পেটিং করা বাকি আছে।
পাউবো সূত্রে জানাযায়, উপজেলায় ১১২টি প্রকল্পে এ বছর ২০ কোটি টাকার কাজ চলছে। উপজেলায় ফসল রক্ষাবাঁধের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৮৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ক্লোজার রয়েছে ৯টি।
হাওরপাড়ের জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ কবির বলেন, ৬৯ ৭০ ও ৭১ নম্বর প্রকল্পে এখনো মাটির কাজ শেষ হয়নি। মোট হিসাবে এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ কাজ হয়েছে। যা হাওরের ফসল রক্ষার জন্য খুবই বিপজ্জনক।
মাটিয়ান হাওরপাড়ের রতনশ্রী গ্রামের হেলাল মিয়া জানান, ২৮, ২৯, ৩২ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পের কাজ খুবি দূর্বল হয়েছে। তারা তাদের ইচ্ছা মতো কাজ করছে। এখনো দুর্বাঘাস লাগানো তো দূরের কথা এখনো দুরমুজ ও ড্রেসিংয়ের কাজেই করেনি।
৩৩নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শাহ আলম এর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে কাজের ধীরগতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাঁধে কাজ চলছে। আস্তে আস্তে বাঁধের কাজ শেষ হবে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। এতে কারো সমস্যা হওয়ারও কথানা।
এ ব্যাপারে মাটিয়ান হাওরের ৭০ ও ৭১নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সাহাবুদ্দিন আখুঞ্জি ও উজ্জল মিয়া কালবেলাকে বলেন, মাটি ধসে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। দ্রুতই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ফসল রক্ষাবাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি সুপ্রভাত চাকমা বলেন, মাটিয়ান হাওরের পুটিমারা এলাকায় তিনটি প্রকল্প ছাড়া সবগুলো প্রকল্পের মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতই এ তিনটি প্রকল্পের মাটির কাজও শেষ হয়ে যাবে। যারা কাজ দূর্বল ও অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।